নড়াইল জেলা প্রতিনিধি। নড়াইলে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া পাঁচ আসামির ভিডিও করায় সময় টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি সজীব রহমানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকেলে নড়াইল জেলা জজ আদালতের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, ২০১৫ সালে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের কালাচাঁদপুর গ্রামে শিশু শাহীন হত্যাকাণ্ডে আজ পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। এ ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে আদালত চত্বরে যান সাংবাদিক সজীব রহমান। বিকেল চারটার দিকে আদালত থেকে দণ্ড পাওয়া আসামি শিমুল মল্লিক ও তাঁর মা শামীমা বেগম এবং একই গ্রামের সৈয়দ লিটন, জাহিদুর রহমান ও সৈয়দ জাহাঙ্গীরকে প্রিজন ভ্যানে তুলছিল পুলিশ। ভুক্তভোগী সাংবাদিক সজীব রহমান বলেন, হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আদালত চত্বর থেকে বের হওয়ার সময় ক্যামেরা দেখে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করলেও আসামির স্বজনেরা হামলে পড়েন। এমনকি হাতকড়া পরা অবস্থায় আসামিরাও হামলা করেন। আদালতে পুলিশ থাকলেও সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে কোনো নিরাপত্তা নেই। এ সময় ভিডিও করতে গেলে সাংবাদিক সজীবকে আসামি ও তাঁর স্বজনেরা প্রথমে গালাগাল করেন এবং হেলমেট হাতে এক স্বজন মারতে তেড়ে আসেন। পুলিশ হেফাজতে থাকা এক আসামি সজীবকে লাথি মারেন। পরে আসামির স্বজনেরা সজীবকে মারধর করেন। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আরও দুই সাংবাদিক বলেন, রায়ের পর ক্ষিপ্ত হয়ে হাতকড়া পরা অবস্থায় আসামিরা সাংবাদিকের ওপর হামলা করবে এটা পুলিশের উদাসীনতা ছাড়া কিছুই নয়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা। এছাড়াও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে চ্যানেল টুয়েন্টিফোর ও কালের কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম তুহিন বলেন, আদালত রায় দিয়েছেন। আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করবো এটাই স্বাভাবিক। রায়ের পর ক্ষিপ্ত হয়ে হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় আসামি সাংবাদিকের উপর হামলা করবে এটা পুলিশের উদাসীনতা ছাড়া কিছু নয়। দায়িত্ব পালনকালে আসামির স্বজনরা হামলা চালাবে! দেশে সব ঘটনাকে কেন্দ্র করে বারবার সাংবাদিক কেন লাঞ্ছিত হবে? দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে আদালত এলাকায় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নাই। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এবিষয়ে নড়াইল আদালত পুলিশের পরিদর্শক সরেস চন্দ্র বলেন, প্রথম থেকে উগ্র আচরণ করছিলেন আসামিরা। তারা সাংবাদিককে গালাগাল করেছেন। তবে লাথি মারেননি। আসামিদের আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে কেউ একজন হেলমেট দিয়ে হয়তো এক সাংবাদিককে মারতে গিয়েছেন। আসামিরা পুলিশের হেফাজতে ছিলেন, তাদের পক্ষে মারার কোনো সুযোগ নেই। স্বজনেরা কোনো কিছু করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন।