
স্টাফ রিপোর্টার আরাফাত হোসেন
কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনতাজ ঘটকের মৃত্যু । ১৭ জনের নামোল্লেখ করে মামলা। এলাকায় উত্তেজনা। পুলিশ মোতায়েন। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত মোহিষাডোরা গ্রামে গত শনিবার রাতে সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রোববার রাত আনুমানিক ১০ টার সময় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ইনতাজ ঘটক (৪৭) এর মৃত্যু ঘটেছে। এঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরাও ঘটনাস্থলীয় এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। নিহত ইনতাজ উক্ত গ্রামের মৃত মুনতাজ শেখ এর পুত্র। হত্যাকান্ডের ঘটনার বিষয়ে ভেড়ামারা থানায় ১৭ জনকে এজাহার নামীয় আসামী করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে জড়িত করে ইতোমধ্যেই ভিকটিমের পরিবারের পক্ষে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এলাকাবাসী, প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের নিকট থেকে জানা যায়, জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন শনিবার রাত অনুমান ০৯.০০ টার দিকে তার বাড়ির কাছের রাস্তার পাশে তার উপর হামলা চালায়।
ঘটনার সাথে জড়িত আসামীরা মারতে মারতে তাকে টেনে হেঁচড়ে উক্ত স্থান থেকে ১/২ শত গজ দুরে নিয়ে যায়। সেখানে তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হত্যার উদ্দেশ্যে হাতুড়িসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। আক্রমণের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গণপিটুনির মত করে ২০/২২ জন হামলাকারী পূর্বপরিকল্পনামাফিক তাকে হত্যার জন্য তার উপরে হামলা পরিচালনা করে। অন্য একটি সূত্র জানায়, হত্যা মিশন পরিচালনা করার কিছুক্ষণ পূর্বে আসামীরা একটি বৈঠক করে। সেই বৈঠকেই তার উপরে হামলার সিদ্ধান্ত নেয় হত্যা মামলার আসামীরা।
এদিকে রোববার রাতে ইনতাজের মৃত্যু সংবাদ এলাকায় পৌছালে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। উত্তেজনা প্রশমণে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরন করেন ভেড়ামারা থানার ওসি। ধরমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলগের সাধারন সম্পাদক, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবুল আলম জানান, নিহত ইনতাজ ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন । ব্যক্তিজীবনে ইনতাজ ৫ সন্তানের জনক। তিনি পেশায় ঘটকালী ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। সম্প্রতি বিবাদমান জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজ-পত্র ইত্যাদি উঠানোর পর এই সহিংস ঘটনাটি ঘটে।
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা বলেন, এলাকায় উত্তেজনা প্রশমনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ভেড়ামারা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নান্নু খান বলেন, এ ঘটনায় ভেড়ামারা থানায় ১৭ জনকে এজাহার নামীয় আসামী করে হত্যা মামলা নম্বর ২১ তারিখঃ ২৩/১০/২২ রুজু হয়েছে। মামলায় কয়েকজন অজ্ঞাতনামা আসামীও রয়েছে। হত্যাকান্ডে দেশীয় অস্ত্র যেমন, হাতুড়ি, লোহার রড, লাঠি-সোটার ব্যবহার করেছে আসামীরা। আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্যে ইতোমধ্যেই তৎপরতা শুরু করা হয়েছে মর্মে জানান এই কর্মকর্তা। এদিকে সোমবার বিকালে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহতের লাশ রাজশাহী থেকে এলাকায় পৌছেনি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে সেখানে নিহতের লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হতে দেরি হচ্ছে বলে জানা গেছে।