সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ।।
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া তিন চরমপন্থির পরিচয় মিলেছে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০ টার দিকে শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের শশ্মানঘাট এলাকায় ওই তিনজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহতরা হলেন- জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের রাহাজ উদ্দিনের ছেলে হানিফ (৫০), হানিফের শ্যালক হরিণাকুন্ডু উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের উম্বাদ আলীর ছেলে লিটন হোসেন (৩৫) ও কুষ্টিয়া ইবি থানার পিয়ারপুর গ্রামের রাইসুল ইসলাম। এর মধ্যে, হানিফ পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) সক্রিয় নেতা ছিলেন বলে জানা গেছে।
হানিফের ভাই সাজেদুল ইসলাম ইশা বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে হানিফের মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। এরপর ভাই বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। সন্ধ্যা থেকে তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও ধরেননি। পরে রাতে তার মৃতদেহ পাই।’
ভাগনে নিহতের খবর পেয়ে শৈলকুপা থানায় আসা রাইসুল ইসলামের মামা মোহাম্মদ মিল্টন বলেন, ‘লেখাপড়া শেষ করে রাইসুল চাকরি নেওয়ার চেষ্টা করছিল। কুষ্টিয়ার এক সংসদ সদস্যের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। তবে ঠিক কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে, তা জানতে পারিনি।’
মোহাম্মদ মিল্টন আরও বলেন, ‘রাইসুল পিয়ারপুর এলাকার নানাবাড়ি থেকে শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে বের হয়ে যায়। সন্ধ্যা থেকে তার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাতে জানতে পেলাম, রাইসুল গুলিতে নিহত হয়েছে।’
শৈলকূপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুম খান বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজনের নাম হানিফ। তিনি পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন।’’
ওসি আরো বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে দুটি কালো রঙের মোটরসাইকেল, একটি ম্যাগজিন ও গুলি পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। মরদেহ উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
এদিকে হত্যার বিষয়ে চরমপন্থী সংগঠন জাসদ গণবাহিনীর নেতা কালু পরিচয়ে দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
ক্ষুদে বার্তায় লেখা আছে, এতদ্বারা ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনাবাসির উদ্দেশ্যে জানানো যাইতেছে যে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিনাকুন্ডু নিবাসী হানিফ তার দুই সহযোগীসহ জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। অত্র অঞ্চলের হানিফের সহযোগীদের শুধরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো, অন্যথায় আপনাদের একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।