নড়াইল জেলা প্রতিনিধি। নড়াইলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ১৮ জনের জামিন আবেদন বাতিল করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নড়াইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাদিউজ্জামান এ আদেশ দেন। আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আসামিরা হলেন- নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ কুন্ডু মিটুল, জেলা মৎস্যজীবী লীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম, জেলা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস বিলো, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও কলোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আশীষ কুমার বিশ্বাস, জিটিভির জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক মীর্জা মাহমুদ রন্টুসহ মোট ১৮ জন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, গুলিবর্ষণ ও হুমকি ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুর রহমান পলাশ বাদী হয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফিসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ ও ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন এ বিষয়ে আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আজিজুল ইসলাম বলেন, আসামিরা গত ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। হাইকোর্ট আসামিদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দেন। পরে আসামিরা রোববার নড়াইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণ করার আদেশ দেন। জামিন নামঞ্জুর হওয়া ১৮ জন এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে চলতি বছরের আগস্টের ৪ তারিখে নড়াইল সদরের মালিবাগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিক্ষোভ মিছিলে করেন। মিছিলে গুলি বর্ষণ, বোমা বিস্ফোরণ ও মারধর করার অভিযোগ এনে ১০ সেপ্টেম্বর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শেখ মোস্তফা আল-মুজাহিদুর রহমান পলাশ। আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, তার বাবা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপনসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অভিযুক্ত করা হয় মামলায়। ওই মামলায় ৪৭ নং আসামি করা হয় বেসরকারি টেলিভিশন জিটিভির সাংবাদিক মীর্জা মাহমুদ হোসেন রন্টুকে। তিনি আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কোনো দলীয় পদে নেই বলে সংগঠন ও সাংবাদিকের স্বজনরা নিশ্চিত করেছেন। এই মামলায় বেসরকারি টেলিভিশন জিটিভির জেলা প্রতিনিধি মীর্জা মাহমুদ হোসেন রন্টুসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ২২ নেতাকর্মী উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করেন নভেম্বর মাসের ১৯ তারিখে। উচ্চ আদালত তাদের চার সপ্তাহ অর্থাৎ আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।