লক্ষ্মীপুরে মাদ্রাসাছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবারের অভিযোগ হত্যাকাণ্ড
লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় অবস্থিত আল-মুঈন ইসলামী একাডেমিতে সানিম হোসাইন (১০) নামে হেফজ বিভাগে এক ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, তাকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ মাদ্রাসার টয়লেটে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
মঙ্লবার (১৩ মে) বিকেলে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় মাহমুদুর রহমান নামে এক শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত সানিম রায়পুর উপজেলার চরবংশী ইউনিয়নের হুমায়ুন কবির ও জয়নবী বেগমের ছেলে।
পুলিশ ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে সানিম ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে ভর্তি হয়। মঙ্গলবার সকালে কোরআনের পড়া না পারায় শিক্ষক মাহমুদুর রহমান তাকে বেত্রাঘাত করেন। এরপর দুপুরে জোহরের নামাজের পর অন্য ছাত্ররা খাবার খেতে গেলেও সানিম যায়নি। অনেক সময় টয়লেট থেকে বের না হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। একপর্যায়ে টয়লেটের দরজা ভেঙে দেখা যায়, গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছে সানিমের নিথর দেহ।
পরে শিক্ষক ও ছাত্ররা মরদেহটি নিচে নামিয়ে আনেন এবং পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য।
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় মাহমুদুর রহমান নামে এক শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের বাবা হুমায়ুন কবির অভিযোগ করেন, শিক্ষক মাহমুদুর রহমান প্রতি সপ্তাহে ছেলের প্রতি বিশেষ নজরদারির জন্য ৫০০ টাকা করে নিতেন। চলতি সপ্তাহে টাকা দিতে দেরি হওয়ায় সানিমের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। অতিরিক্ত নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবি জানান তিনি।
এদিকে, মাদ্রাসার সুপার মাওলানা বশির উদ্দিন বলেন, ছাত্র সানিম রাগ ও অভিমান থেকে নিজেই আত্মহত্যা করেছে। তাকে কোনোভাবে নির্যাতন করা হয়নি।
তবে লক্ষ্মীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ রেজাউল হক জানান, শিক্ষকদের দাবি শিশুটি আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজন শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।