ঢাকা | বঙ্গাব্দ

পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ঘেরাও

পদ্মার ভাঙন ঠেকানোর দাবি নিয়ে ঝড়ো বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কয়েকশ মানুষ কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয় ঘেরাও করেছে।
  • আপলোড তারিখঃ 16-09-2024 ইং |
  • নিউজটি দেখেছেনঃ 1216320 জন
পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ঘেরাও ছবির ক্যাপশন: পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ঘেরাও
ad728

এমদাদুল হক,কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি:- পদ্মার ভাঙন ঠেকানোর দাবি নিয়ে ঝড়ো বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কয়েকশ মানুষ কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয় ঘেরাও করেছে। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা দাবী করেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া, বহলবাড়িয়া ও সাহেবনগরসহ আশপাশের এলাকায় ইতোমধ্যেই কয়েকশ বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। তারা বলেন, হুমকির মুখে পড়েছে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী জাতীয় মহাসড়ক। দেশের উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি যেকোনো মুহূর্তে বিলীন হতে পারে নদীগর্ভে। সাহেবনগর নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অপু বলেন, বিগত তিন বছর যাবৎ নদীগর্ভে শত শত একর আবাদি জমি বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে জাতীয় গ্রিডের ছয়টি বিদ্যুৎ সঞ্চালনের টাওয়ারসহ বসতবাড়ি, শতবর্ষী স্কুল-কলেজ হুমকির মুখে রয়েছে। কুষ্টিয়া ঈশ্বরদী-মহাসড়ক থেকে নদী মাত্র ৫০ মিটার দূরে রয়েছে। সড়কটি যেকোনো সময় ভাঙনের কবলে পড়বে। তিনি অভিযোগ করেন, এসব এলাকার ভাঙনরোধে সরকারিভাবে ১ হাজার ৪শ ৭২ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও চলতি মৌসুমে কোনো ধরনের জিও ব্যাগ ফেলার কাজও করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিনি দ্রুত ওই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান। এ সময় বিক্ষোভকারীদের পক্ষে নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির নেতারা কথা বলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমানের সঙ্গে। পাউবো প্রকৌশলীর সঙ্গে যখন ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির নেতারা আলোচনা করছিলেন, তখন কাঁদতে কাঁদতে সেখানে হাজির হন শরিফা খাতুন নামে এক মহিলা। নিজের বসতবাড়ী রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে সবার কাছে হাতজোড়ে করে অনুরোধ করেন তিনি। শরিফা বলেন, কোনো ব্যবস্থা না নিলে আজকেই তার বাড়িটি নদীতে তলিয়ে যাবে। এ কথা শুনে প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, শরিফা খাতুনের বাড়ির সামনের নদীতে জিও ব্যাগ ফেলেই ভাঙন প্রতিরোধের কার্যক্রম শুরু হবে। এ সময় এলাকাবাসী রাশিদুর রহমানকে বলেন, জিও ব্যাগ ও টিউব পৌঁছে দিলে তারা নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ শুরু করবেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, সাহেবনগর বেড়িবাঁধসহ বিপর্যস্ত এলাকায় রবিবার থেকেই জিও ব্যাগ ও টিউব ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে শুরু হবে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ। ভাঙন প্রসঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, 'টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি ২-৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ওই এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে। আমরা ব্যাপারটি অবজারভেশনের মধ্যে রেখেছি। শুক্রবারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিদ্যুৎ সঞ্চালন টাওয়ার ও বেড়িবাঁধসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষায় সেখানে দ্রুত জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলার কাজ শুরু হচ্ছে।' পাউবো প্রকৌশলীর ভাষ্য, আপৎকালীন পরিস্থিতি পার করে দ্রুত ভাঙনরোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য নেওয়া প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, পদ্মার তীর ঘেঁষে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাঁধ নির্মাণের কারণে ভাঙন তীব্র হয়েছে। এটি নির্মাণের পর থেকেই তাদের বসতবাড়ি ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেসবের ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান এলাকাবাসী। এ বিষয়ে প্রকৌশলী রাশিদুর রহমানের বক্তব্য, 'রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫০০ মিটার গ্রোয়েন (বাঁধ) নদীর মধ্যে আছে। সেখানে পানি বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অপর পাড়ে ভাঙছে। সেটা এলাকাবাসীও ধারণা করছে। যেহেতু নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে, সেহেতু ভাঙনটা তীব্র হচ্ছে।' পরে ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিত করে স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন ঠেকাতে ফিরে যান ওই এলাকার বাসিন্দারা। উল্লেখ্য যে, কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর পাড় এলাকা ভাঙনের কবল থেকে ওই এলাকা রক্ষার জন্য এলাকাবাসী সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কেউই কোন গুরুত্ব দিচ্ছেনা বলে দাবী এলাকাবাসীর।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ ডেইলি ভোরের সকাল

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
notebook

বকশীগঞ্জে জোরপূর্বক জায়গা জবর দখলের অভিযোগ।